আয়াতে হিজ্ব (শত্রুর উপর বিজয় লাভের দোয়া)
আল কোরআনে আশ্চর্য ৫টি আয়াত।যার প্রত্যেকটির মধ্যে ১০টি কাফ হরফ রয়েছে, ক্বাফ হরফ বা অক্ষরের অর্থ ক্বদীর অর্থাৎ সর্বশক্তিমান, কুদরত ও মহিমা বুঝায় (তাফসীরে কাবীর-ইমাম ফখরুদ্দিন রাযীرَحْمَةُ اللّٰهِ عَلَيْهِ )। সাইয়্যেদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رَضِيَ اللّٰهًُ عَنْهُ) থেকে বর্ণিত, এই ক্বাফ বর্ণটি আল্লাহ তায়ালার একটি নাম। পাক কোরআনের একটি সূরার নাম এই অক্ষরের মর্ম ও নামানুসারে সূরা ‘ক্বাফ' রাখা হয়েছে।এরদ্বারা বুঝাযায় ক্বাফ অক্ষরটির গুন(তাসির) শক্তি ও জয়। এই ৫টি আয়াতে ৫০টি ক্বাফ অক্ষর থাকায় এই আয়াতে হিজবের আমল দ্বারা শক্তি ও জয়লাভ করার অন্যতম কারণ বর্ণনা করা হয়েছে। এ আয়াতগুলোতে নবী, রসূলগণের (عَلَيْهِ السَّلَامْ) যুদ্ধের ও অন্যায় ভাবে হত্যার ঘটনায় পরিপেক্ষিতে নাযিল হয়েছে। রসূলুল্লাহ (ﷺ) কে সত্যবিজয়ের জন্য যুদ্ধের বিষয়ে উপদেশ দেয়া হয়েছে। এই সকল কারণসহ আরো অনেক গোপন রহস্যময় কারণে এই আয়াতগুলো যুদ্ধে ও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করার গুণ (তাসির) লাভ করেছে।
আয়াতে হিজব বা বিজয় লাভের দোয়ার ফযিলতঃ
(১) যে ব্যক্তি এই আয়াতগুলো লিখে সাথে রাখবে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে সবসময় শত্রুর উপর বিজয় দান করবেন। কোনো রকম শত্রুর অস্ত্র ও চক্রান্ত তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। কেউ তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে পরাজিত এবং লাঞ্ছিত হবে। লোকের অন্তরে তার প্রতি ভয়ের সঞ্চার হবে,এবং সে বিজয় লাভ করবে।
শত্রুকে হারানোর দোয়াঃ
(২)বিখ্যাত ফকীহ্ আলী আহমদ বিন্ মূসা(رَحْمَةُ اللّٰهِ عَلَيْهِ) বলেছেন,আল কোরআনে ৫টি আয়াত আছে, যে কেউ সেগুলো শত্রুর সামনে পড়বে, শত্রু পরাজিত হবে, অত্যাচারীর সামনে পড়লে আল্লাহ পাক তার অত্যাচার থেকে রক্ষা করবেন।
ওলী হওয়ার দোয়াঃ
(৩)অনেক বড় বুযুর্গ, পীর নজমুদ্দীন কোবরা(رَحْمَةُ اللّٰهِ عَلَيْهِ) লিখেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন এই পাঁচটি আয়াত অর্থাৎ আয়াতে হিজব পড়বে, ফেরেশতাগণ তার সাক্ষী হবে এবং সে সমস্ত বিষয়ে বিজয়ী হবে। তার সম্মান বৃদ্ধি পাবে, কেউ তার সাথে প্রতিযোগিতা করে জয়লাভ করতে পারবে না। যে এই আয়াত ৫টি নিয়মিত পড়বে তিনি কুতুবের (ওলীদের বড় একটি স্তর) মর্যাদা লাভ করিবেন।
একজন কুতুব বলেছেন, আমি প্রত্যেক বিষয়ে শুধুমাত্র এই আয়াতের আমলের বরকতে বিজয় লাভ করেছি।
(৪) সম্রাট সুলতান মাহমুদ গজনবী(رَحْمَةُ اللّٰهِ عَلَيْهِ) ১৭ বার ভারতবর্ষ আক্রমণ করেছিলেন এবং প্রত্যেকবারেই এই আয়াতের আমলের বরকতে বিজয়লাভ করেছিলেন। সুলতান মাহমুদ গজনবী(رَحْمَةُ اللّٰهِ عَلَيْهِ ) এর পীর ও মুরশিদ হযরত মূসা ছেদরানী (رَحْمَةُ اللّٰهِ عَلَيْهِ) তাঁকে এই আয়াত গুলো শিক্ষা দিয়েছিলেন। এই আয়াত গুলো বিজয় লাভের জন্য অত্যান্ত উপকারী আয়াত।
রোগ মুক্তির দোয়াঃ
(৫) যে ব্যক্তি জুমার দিন এই আয়াতগুলো লিখে ধুয়ে পানি পান করবে, তার সকল প্রকার রোগ-ব্যধি দূর হবে।
সম্মান লাভের দোয়াঃ
(৬) এই ৫টি আয়াত লিখে টুপির নিছে মাথায় রাখে, যেখানেই যাবে সম্মান লাভ করবে।
মানুষকে আকর্ষণ করার দোয়াঃ
(৭) ইমাম গাজ্জালী (رَحْمَةُ اللّٰهِ عَلَيْهِ) বর্ণনা করেছেন, মানুষের ভক্তি, আকর্ষণ লাভ করার জন্য এই আয়াতের আমল পরশ পাথরতুল্য কার্যকরী।
শত্রু দমনের দোয়াঃ
(৮)শত্রু দমনের জন্য এই আয়াতগুলো প্রতিদিন ৫ বার করে পড়লে খুবই ফল পাওয়া যাবে।শত্রু নিজেই নিজের চক্রান্তে পড়ে যাবে।
আয়াতে হিজবের ছবিঃ
সবাইকে শেয়ার করার অনুরোধ।
আয়াতে হিজব কি?
আয়াতে হিজব হলো ৫টি সূরার বিশেষ ৫টি আয়াত, যার প্রতিটি আয়াতে ১০টি করে ক্বফ হরফ টি আছে আর এই আয়াত হলো শত্রুর উপর বিজয় লাভের আয়াত। আয়াত গুলো হলো সুরা বাকারার আয়াত নং ২৪৬, সুরা আলে ইমরান আয়াত নং ১৮, সূরা নিসা- আয়াত নং ৭৭, সূরা মায়েদা আয়াত নং ২৭, সুরা রায়াদ ১৬ নং আয়াত।
আয়াতে হিজবের ফজিলত কি?
আয়াতে হিজব পড়ে যেই কাজে হাত দেয়া হবে, সেই কাজ সফল হবে। যেই কাজে প্রতিযোগিতা সেই কাজের আগে পড়লে সফল হবে, শত্রুর উপর বিজয় লাভের জন্য এই আয়াতের আমল পরশ পাথরের মত।
3 মন্তব্যসমূহ