গর্ভবতী নারী কোন মাসের কোন সুরা পড়তে হয়? গর্ভবতী মায়ের করণীয় আমল।

 গর্ভবতী নারী কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়ঃ

গর্ভবতীর আমল দোয়া



মা পৃথিবীর অমূল্য উপহার। মায়ের ঋণ শোধ হবার নয়।পবিত্র কুরআন শরীফে মা- বাবার ব্যপারে অসংখ্যা আয়াত নাযিল হয়েছে।

গর্ভধারিণী মায়ের ব্যপারে মহান আল্লাহ তায়ালা  ইরশাদ করেন, তার মা তাকে কষ্ট সহ্য করে গর্ভে ধারন করেছে এবং কষ্ট সহ্য করে তাকে প্রসব করেছে, আর তাকে  বহন করে চলাফেরা করা ও দুধ ছাড়ানো ৩০ (ত্রিশ) মাসের মধ্যে। (সুরা আহকাফ, আয়াত:১৫, পারা- ২৬)


পবিত্র কুরআনে সুরা লোকমানেও মা- বাবার হকের কথা বহুবার এসেছে। মায়ের গর্ভ কষ্টের কথাও এসেছে।  সুরা লোকমান, আয়াত নং- ১৪

প্রিয় নবী (صلى الله عليه و سلم) বলেছেন,  "যখন কোনো নারী তার স্বামীর পক্ষ থেকে গর্ভধারিণী হয় আর স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন, তখন সে গর্ভবতী নারী আল্লাহর জন্য সর্বদা রোজা পালনকারী ও সারা রাত নফল ইবাদতকারীর মতো সওয়াব পেতে থাকবে। তার যখন তার প্রসব ব্যথা শুরু হয়, তখন তার জন্য আল্লাহ পাকের কি কি নেয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়, তা আসমান-জমিনের কোনো ব্যক্তিই জানে না।আর সে নারী যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার বিনিময়ে একটি করে নেকি দেওয়া হয়। এ সন্তান যদি কোনো রাতে তাকে জাগিয়ে রাখে,ঘুমাতে না দেয়,কান্না করে মাকে জাগিয়ে দেয়, তাহলে সে আল্লাহর রাস্তায় সত্তরটি গোলাম আযাদ করার সওয়াব পাবে।’ (তাবরানি শরিফ, হাদিস নং: ৬৯০৮; আল মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ৪/৩০৫)

প্রিয় নবী(صلى الله عليه و سلم )বলেছেন,

"মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের জান্নাত" (মুসনাদে শাহাব,১/১০২ হাদিস: ১১৯।

"যে সন্তান মায়ের পায়ে চুমু দিলো,সে যেনো জান্নাতের দরজায় চুমু দিলো।" (বাহারে শরিয়ত ৩/৪৪৫ অংশ ১৬)

"যে সন্তান পিতা মাতার পক্ষ থেকে হজ্জ করবে, তাকে দশটি হজ্জের সাওয়াব দেয়া হবে। (দারে কুতনি, ২/৩২৯ হাদিস: ২৫৮৭)। আর মা-বাবার পক্ষে থেকে সন্তান দান-সদকা করলেও, তাকে দশগুন সাওয়াব দেয়া হবে।

আরো পড়ুনঃ

ছোট ছেলে বাবুর আধুনিক ইসলামিক সুন্দর নাম।

ছোট মেয়ে বাচ্চার ইসলামিক আধুনিক সুন্দর নাম। 

গর্ভের সন্তান নিরাপদে থাকার দুইটি সহজ আমল।

১. لَآ اِلٰهَ اِلَّا اللّٰهُ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু) ১১ বার(এগারো বার) কোনো বড় কাঁচের প্লেটে অথবা কাগজে লিখে গর্ভবতী নারীকে পান করিয়ে দিন।আল্লাহ চাইলে গর্ভের সন্তান নিরাপদে থাকবে।

২. ُيَا حَيُّ يَا قَيُّوْم (ইয়া হায়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুমু) ১১১ বার (একশত এগারো) কাগজে লিখে গর্ভবতীর পেটে বেঁধে রাখুন। সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত বেঁধে রাখুন। (সামন্য সময়ের জন্য খুলে রাখলেও সমস্যা নেই) আল্লাহ পাক চাইলে গর্ভ নিরাপদ থাকবে এবং গর্ভের সন্তান সুস্থ প্রসব হবে।


গর্ভ অবস্থায় নিজের আমল- ইবাদত যথা সাধ্য করার চেস্টা করবেন, তাহলে আল্লাহ পাকের রহমতে গর্ভের সন্তান নেককার হবে।আর সন্তান গর্ভ অবস্থায় সকল ধরনের পাপের কাজ থেকে বিরত থাকা চাই, না হয় এই গুনাহের আসর সন্তানের উপর ও পড়বে।

গর্ভ অবস্থায় নারী যদি বেশি বেশি নফল নামায পড়ে, বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করে, বেশি বেশি যিকির তাসবিহ,অযিফা-দুয়া পড়ে তাহলে আল্লাহ পাকের রহমতে সন্তান ভাগ্যবান হবে, গর্ভ সন্তান নিরাপদ থাকবে, সন্তান সুস্থ,  জ্ঞানী ও সৎ হবে।

গর্ভবতী নারী যে মাসে যে সূরা পড়বেনঃ

সন্তান গর্ভে আসার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়  মাসে গর্ভবতী নারী সূরা লোকমান ও সূরা ইনশিক্বাক পড়তে পারেন।

৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ মাসে সূরা ইউসুফ ও আল ইমরান পড়তে পারেন।

এবং ৭ম, ৮ম ও ৯ম মাসে সূরা মারইয়াম ও সূরা মুহাম্মাদ পড়তে পারেন।

সূরা লোকমান তিলাওয়াত বা পড়লে  আল্লাহ চাইলে গর্ভের সন্তান জ্ঞানী, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও হিকমত সম্পন্ন হবে।

সূরা ইনশিক্বাক তিলাওয়াত করলে গর্ভের সন্তান সকল প্রকার ক্ষতি থেকে আল্লাহ চাইলে নিরাপদ থাকবে।

সূরা ইউসুফ তিলাওয়াত করলে আল্লাহ পাকের দয়ায়, গর্ভের সন্তানের প্রকাশ্য ও গোপনীয়  উভয় দিক সুন্দর হবে।

সূরা আল ইমরান তিলাওয়াত করলে আল্লাহর রহমতে গর্ভের সন্তান দ্বীনের পথে চলবে।

সূরা মারইয়াম তিলাওয়াত করলে,আল্লাহর রহমতে গর্ভের সন্তান ফরহেযগারিতা ও তাক্বওয়া অর্জন করবে।

সূরা মুহাম্মাদ তিলাওয়াত করলে আল্লাহ পাকের দয়ায় গর্ভের সন্তান খুবই উত্তম চরিত্রের হবে।


সন্তান গর্ভে আসার পর মা যত ভালো কাজ, ভালো পড়ালেখা, ভালো গুনের কাজ করবে আল্লাহ চাইলে সন্তান ও সেই গুন গুলো পাবে। এই সময়ে নবী-রাসুল, সাহাবী,আউলিয়া (عليهم الرضوان) মনীষীদের জীবনীও পড়তে পারেন।


গর্ভ অবস্থায় যে সব বিষয়, যেমন: খাবার, কাজকর্ম, চাল-চলন, ঔষধ ক্ষতিকর তা থেকে বিরত থাকা চাই। পুষ্টিকর খাদ্য, ফলমুল,শাক-সবজি প্রয়োজন অনুযায়ী খাওয়া চাই। এই ব্যপারে, ভালো অভিজ্ঞ গাইনী নারী ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।


আরো পড়ুন জনপ্রিয় পোস্ট গুলো:

• ডেঙু, মেলিরিয়া, টায়পয়েড জ্বরের সর্তকতা ও দোয়া।

আওয়াবিনের নামায কাকে বলে,কখন পড়তে হয় এবং ফযিলত বরকত।

সায়্যেদুল ইস্তেগফার কখন পড়তে হয়,তাওবা করার সঠিক নিয়ম

দুরুদ শরিফের ফযিলত,  বরকত এবং আমল।

বদনজরের থেকে বাঁচার আমল ও দোয়া বাংলায়

শস কুফল বা বান জাদু টোনার ৬তালা দোয়া ও আমল।

৩৩ আয়াত কি? ৩৩আয়াতর আমল ও বরকত।বিপদ থেকে বাঁচার দূর্গ।

গর্ভবতী নারী কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়?

সন্তান গর্ভে আসার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় মাসে গর্ভবতী নারী সূরা লোকমান ও সূরা ইনশিক্বাক পড়তে পারেন। ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ মাসে সূরা ইউসুফ ও আল ইমরান পড়তে পারেন। এবং ৭ম, ৮ম ও ৯ম মাসে সূরা মারইয়াম ও সূরা মুহাম্মাদ পড়তে পারেন।

গর্ভবতী মায়ের দোয়া আমল কি?

সূরা লোকমান তিলাওয়াত বা পড়লে আল্লাহ চাইলে গর্ভের সন্তান জ্ঞানী, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও হিকমত সম্পন্ন হবে। সূরা ইনশিক্বাক তিলাওয়াত করলে গর্ভের সন্তান সকল প্রকার ক্ষতি থেকে আল্লাহ চাইলে নিরাপদ থাকবে। সূরা ইউসুফ তিলাওয়াত করলে আল্লাহ পাকের দয়ায়, গর্ভের সন্তানের প্রকাশ্য ও গোপনীয় উভয় দিক সুন্দর হবে। সূরা আল ইমরান তিলাওয়াত করলে আল্লাহর রহমতে গর্ভের সন্তান দ্বীনের পথে চলবে। সূরা মারইয়াম তিলাওয়াত করলে,আল্লাহর রহমতে গর্ভের সন্তান ফরহেযগারিতা ও তাক্বওয়া অর্জন করবে। সূরা মুহাম্মাদ তিলাওয়াত করলে আল্লাহ পাকের দয়ায় গর্ভের সন্তান খুবই উত্তম চরিত্রের হবে।

গর্ভের সন্তান সুস্থ থাকার আমল কি?

১. لَآ اِلٰهَ اِلَّا اللّٰهُ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু) ১১ বার(এগারো বার) কোনো বড় কাঁচের প্লেটে অথবা কাগজে লিখে গর্ভবতী নারীকে পান করিয়ে দিন।আল্লাহ চাইলে গর্ভের সন্তান নিরাপদে থাকবে। ২. ُيَا حَيُّ يَا قَيُّوْم (ইয়া হায়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুমু) ১১১ বার (একশত এগারো) কাগজে লিখে গর্ভবতীর পেটে বেঁধে রাখুন। সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত বেঁধে রাখুন। (সামন্য সময়ের জন্য খুলে রাখলেও সমস্যা নেই) আল্লাহ পাক চাইলে গর্ভ নিরাপদ থাকবে এবং গর্ভের সন্তান সুস্থ প্রসব হবে।

সাওয়াবের নিয়তে শেয়ার করুন 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

নামহীন বলেছেন…
আপনার পোস্ট গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয়।