ফিতরা ২০২৪ ফিতরা কত টাকা ২০২৪
ফিতরা গরিব দুঃখী মানুষের জন্য রোজাদার স্বাবলম্বী ইমানদারদের পক্ষ থেকে সদকা। যার মাধ্যমে রোজা বিশুদ্ধ হয় এবং গরিব দুঃঃখী মানুষেরাও ঈদের খুশি লাভ করে।
আল্লাহ তায়ালা কোরআনুল কারীমের সুরা আলা এর ২আয়াতে সদকায়ে ফিরতার ব্যপারে ইঙ্গিত দিয়ে ইরশাদ করেন:
قَدْ أَفْلَحَ مَنْ تَزَكَّى وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّى
অনুবাদ: নিশ্চয় লক্ষ্যবস্তু পর্যন্ত পৌঁছেছে, যে পবিত্র হয়েছে এবং নিজ প্রতিপালকের নাম নিয়ে নামায পড়েছে।
( সূরা আ'লা,আয়াত নং- ১৪ ও ১৫; পারা ৩০;)
সদরুল আফাযিল, বিশ্ব বিখ্যাত মুফাসসির হযরত আল্লামা মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ নাঈমুদ্দীন মুরাদাবাদী رَحْمَةُ اللهُ عَلَيْهِ তার বিখ্যাত কিতাব "খাযায়িনুল ইরফানে" এই আয়াতের তাফসিরে লিখেন: এই আয়াতের তাফসীরে একথা বলা হয়েছে যে, এই আয়াত দ্বারা 'সদকায়ে ফিতর দেয়া' এবং “প্রতিপালকে নাম নেওয়া” দ্বারা 'ঈদগাহে যাওয়ার পথে তাকবীর বলা' আর "নামায” দ্বারা 'ঈদের নামায'কে বুঝানো হয়েছে।
(তাফসিরে খাযায়িনুল ইরফান, ১০৭৪ পৃষ্ঠা)
আরো পড়ুনঃ
চাকরি পাওয়ার দোয়া ও ইন্টারভিউতে পাসের দোয়া।
•তারাবীহ নামাজের সকল দোয়া, তারাবির মুনাযাত, ও নিয়ম কানুন।
•আওয়াবিনের নামায কাকে বলে,কখন পড়তে হয় এবং ফযিলত বরকত।
•জুমার দিনের আমল ও দোয়া।জুমার দিনের ২৬টি ফজিলত পুর্ন সুন্নত আমল।
•নামাযের সকল ওয়াজিব। নামাযের নিয়ম কানুন।
•পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের সব দোয়া বাংলায়।
•আইয়্যামে বিজ অর্থ কি? এর রোজার ফযিলত কি? কখন রাখতে হয়।
•দোয়ায়ে কুনুত শিখুন। দোয়ায়ে কুনুত বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ।
•দোয়ায়ে মাসুরা শিখুন। দোয়ায়ে মাসুরা বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ।
দোয়া কুনুত এর মাসয়ালা শিখার নিয়ম।
•সকাল সন্ধ্যার আমল দোয়া ও ওয়াজিফা যিকির সমূহ।
এই বছরের ফিতরা কত টাকাঃ
সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব
প্রিয় নবী صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم এক ব্যক্তিকে নির্দেশ দিলেন যে, গিয়ে মক্কায়ে মুয়ায্যমার অলিগলিতে ঘোষণা করে দাও, “সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব।” (তিরমিযী, ২য় খন্ড, ১৫১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং ৬৭৪)
ফিতরা এর হাদিস ফজিলত
হযরত সায়্যিদুনা ইবনে আব্বাস رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا বলেন: আল্লাহর প্রিয় হাবীব صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم সদকায়ে ফিতর নির্ধারণ করেছেন, যেনো অনর্থক এবং অযথা কথাবার্তা থেকে রোযা পবিত্র (অর্থাৎ পরিছন্ন) হয়ে যায়। তাছাড়া মিসকিনদের খাবারের ব্যবস্থাও যেনো হয়ে যায়। (আবু দাউদ, ২য় খন্ড, ১৫৮ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-১৬০৯)
হযরত সায়্যিদুনা আনাস বিন মালিক رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ বলেন: রাসূলে পাক صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: যতক্ষণ পর্যন্ত সদকায়ে ফিতর আদায় করা না হয়, বান্দার রোযা যমীন ও আসমানের মাঝখানে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে।
(আল ফিরদাউস বিমাসুরিল খাত্তাব, ২য় খন্ড, ৩৯৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৩৭৫৪)
আরো পড়ুনঃ
ছোট ছেলে বাবুর আধুনিক ইসলামিক সুন্দর নাম।
•ছোট মেয়ে বাচ্চার ইসলামিক আধুনিক সুন্দর নাম।
•'আ' দিয়ে বাচাইকরা ছেলেবাবুর ইসলামিক আধুনিক নাম
•বাচাইকরা আনকমন ছেলেদের অর্থসহ ইসলামিক নাম।
•আধুনিক স্টাইলিশ ছেলেদের ইসলামিক নাম অর্থসহ
•আরিয়ান নামের অর্থ কি? আরিয়ান নাম কি হিন্দু নাকি মুসলিম নাম?
•আয়াত নামের অর্থ কি? আয়াত নামের ব্যখ্যাগুলো জানুন।
• মুনতাহা নামের অর্থ কি? মুনতাহা নামের সকল তথ্য ও ব্যাখ্যা।
•রাইসা নামের অর্থ কি? রাইসা নাম কোরআনে আছে কিনা?
•আয়ান নামের অর্থ কি? আয়ান নাম ভাগ্য কেমন জানুন।
•মিম নামের অর্থ কি? মিম নাম কি মরিয়ম নামের হিব্রু ভাষা থেকে আসছে?
•সাদিয়া নামের অর্থ কি?সাদিয়া নামের মানুষ কেমন হয়।
সদকায়ে ফিতরার পরিমাণ:
গম বা এর আটা অথবা গমের ছাতু আধা সা' (অর্থাৎ দু'কেজি থেকে ৮০ গ্রাম কম) বা এর সমমূল্য।
খেজুর বা মুনাক্কা (বড় কিসমিস) অথবা যব কিংবা এর আটা বা যবের ছাতু এক সা' (অর্থাৎ চার কেজি থেকে ১৬০ গ্রাম কম) অথবা এর সমমূল্য।
এটি হচ্ছে একটি (একজনের) সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ। (ফতোয়ায়ে আলমগীরী, ১ম খন্ড, ১৯১ পৃষ্ঠা। ফতোয়ায়ে দুররে মুখতার, ৩ খন্ড, ৩৭২ পৃষ্ঠা)
ফতোয়ার বিখ্যাত কিতাব বাহারে শরীয়তে রয়েছে: উচ্চ পর্যায়ের বিশ্লেষণ এবং সতর্কতা হলো:
ফিতরা কোন কোন জিনিস দিয়ে দেয়া যায়?
এই চারটি বস্তু (গম, খেজুর, মুনাক্কা বা , বড়বকিসমিস, যব ছাড়া যদি অপর কোন বস্তু দ্বারা ফিতরা আদায় করতে চায়, যেমন; চাউল, ভুট্টা, বাজরা (এক প্রকার শষ্য) বা অন্য কোন শষ্য বা কোন বস্তু দ্বারা দিতে চাইলে, তবে এর মূল্যে সাথে তুলনা করতে হবে অর্থাৎ সেই বস্তু আধা সা' গম বা এক সা' যবের সমমূল্যের হতে হবে, এমনকি যদি রুটি দেয় তবে এতেও মূল্যের তুলনা করতে হবে যদিওবা গম বা যবের রুটি হোক না কেন।
(বাহারে শরীয়ত, ১ম খন্ড, ৯৩৯ পৃষ্ঠা)
আরো পড়ুনঃ
গর্ভবতী মায়েদের জন্য দুয়া ও আমল।
•নিঃসন্তান বা সন্তানহীন এর সন্তান লাভের দোয়া ও আমল।
•গর্ভবতী নারীদের কোন মাসে কোন সুরা এবং দোয়া পড়তে হয়।
•মৃত মহিলাদের গোসল দেয়া, কাফন পরানো এবং দাফনের নিয়ম।
•মহিলাদের শুক্রবারের আমল,মহিলাদের জুমার দিনের করণীয় আমল ও ইবাদত।
• দ্রুত বিয়ে হওয়ার দোয়া। দ্রুত বিয়ে হওয়ার সহজ আমল।
ফিতরা ২০২৪
ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক,
গম বা আটা দ্বারা ফিতরা আদায় করলে ১ কেজি ৯২০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য টাকা প্রদান করতে হবে।
যব দ্বারা আদায় করলে ৪ কেজি ১৬০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য টাকা, কিশমিশ দ্বারা আদায় করলে ৪ কেজি ১৬০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য টাকা,
খেজুর দ্বারা আদায় করলে ৪ কেজি ১৬০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য টাকা।
পনির দ্বারা আদায় করলে ৪ কেজি ১৬০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য টাকা ফিতরা প্রদান করতে হবে।
এখানে খেয়াল রাখতে হবে, যার সামর্থ্য যেমন সে তেমন মুল্যবান ফিতরা দেয়া উত্তম।
আরো পড়ুনঃ
•খতমে খাজেগান এর নিয়ম, ফযিলত, দোয়া বাংলায়।
•খতমে আম্বিয়া খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম ও ফযিলত
•খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম। খতমে ইউনুস পড়ার ফযিলত।
•খতমে জালালী বা জালালী খতমের নিয়ম ফজিলত বরকত।
•খতমে কাদেরিয়া বা খতমে গাউসিয়া এর ফজিলত ও আমলের নিয়ম।
•পুরুষের কাফন পরানো -দাফন করা, গোসল দেয়া ও জানাযার নিয়ম।
•মহিলাদের কাফন পরানো, দাফন করা এবং গোসল দেয়ার নিয়ম।
•জানাযার নামায শিক্ষা|জানাযার নামায পড়া ও পড়ানোর নিয়ম বাংলা।
•জানাযার নামাযের সকল দোয়া বাংলা উচ্চারণসহ শিখে নিন।
•গায়েবানা জানাযার ইসলামী হুকুম। গায়েবানা জানাযা পড়া যাবে কিনা?
•আল্লাহু ইয়া বাররু ৭ইয়াবার পড়লে কি হয়? এর ফজিলত ও বরকত।
টাকা দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করা যাবে কিনা?
হযরত সাইয়্যেদুনা যুহাইর ( رَحْمَةُ اللّٰهِ عَلَيْهِ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবূ ইসহাক ( رَحْمَةُ اللّٰهِ عَلَيْهِ) থেকে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন, আমি সাহাবায়ে কেরাম (رَضِىَ اللّٰهُ عَنْهُم) কে এই অবস্থায় পেয়েছি যে, তারা রমজানে সাদাকায়ে ফিতর খাবারের বিনিময়ে টাকা দ্বারা আদায় করতেন। (ইবনে আবি শায়বা-২/৩৯৮, হাদীস নং- ১০৩৭১) এটির সনদ সম্পূর্ণ সহীহ তথা প্রমাণযোগ্য।
হযরত হাসান বসরী ( رَحْمَةُ اللّٰهِ عَلَيْهِ) এর মতে, হযরত হাসান বসরী ( رَحْمَةُ اللّٰهِ عَلَيْهِ) বলেন, টাকা দ্বারা সাদাকায়ে ফিতর আদায় করার দ্বারা কোন সমস্যা নেই। (ইবনে আবি শায়বা-২/৩৯৮, হাদীস-১০৩৭০)
ফিতরা কার উপর ওয়াজিব?
রাসূলে পাক (صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم) প্রত্যেক স্বাধীন-ক্রীতদাস, নারী-পুরুষ, ছোট-বড় মুসলমানের সদকাতুল ফিতর এক ‘সা’ পরিমাণ খেজুর বা যব ওয়াজিব করেছেন। তিনি লোকদের ঈদের নামাযে বের হওয়ার পূর্বেই তা আদায় করার আদেশ দিয়েছেন।( মুত্তাফাকুন আলাইহি বুখারী শরিফ ও মুসলিম শরিফ)
অপর হাদিসে, গম বা আটা আধা 'সা' সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব বলা হয়েছে। জামে তিরমিজি।
ফিতরা কাকে বলে?
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরীব অসহায় মাঝে রোজাদারদের বিতরণ করা দানকে সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা বলে। রোজা বা সিয়াম পালনের পর সন্ধ্যায় ইফতার বা সকালের খাদ্য গ্রহণ করা হয়। সেজন্য রমজান মাস শেষে দানকে সদকাতুল ফিতর বা সকালের খাবারের যাকাত বলা হয়।
রোজার ছোট ভুল ত্রুটি, অধিক কথা ইত্যাদির থেকে রোজাকে পবিত্র করে এই ফিতরা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর ঘোষিত ফিতরা ২০২৪
ইসলামী শরীয়াহ মতে, আটা, যব, কিসমিস, খেজুর ও পনির ইত্যাদি পণ্যগুলোর যে কোন একটি দ্বারা ফিতরা প্রদান করা যায়। গম বা আটা দ্বারা ফিতরা আদায় করলে অর্ধ সা' বা ১ কেজি ৬শ' ৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১১৫ (একশ পনের) টাকা প্রদান করতে হবে। যব দ্বারা আদায় করলে এক সা' বা ৩ কেজি ৩ শ' গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৪০০ (চারশত) টাকা, খেজুর দ্বারা আদায় করলে এক সা' বা ৩ কেজি ৩ শ' গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২,৪৭৫ (দুই হাজার চারশত পঁচাত্তর) টাকা, কিসমিস দ্বারা আদায় করলে এক সা' বা ৩ কেজি ৩শ' গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২,১৪৫ (দুই হাজার একশ পয়তাল্লিশ) টাকা ও পনির দ্বারা আদায় করলে এক সা' বা ৩ কেজি ৩ শ' গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২,৯৭০ (দুই হাজার নয়শ সত্তর) টাকা ফিতরা প্রদান করতে হবে।
ফিতরার ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ মাসয়ালা:
(১) সদকায়ে ফিতর ঐসকল মুসলমান পুরুষ ও নারীর উপর ওয়াজিব, যারা "নিসাবের অধিকারী” এবং তাদের নিসাব "হাজতে আসলিয়্যা" (জীবনের মৌলিক চাহিদা যেমন; অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদি) এর অতিরিক্ত হয়।
(আলমগীরী থেকে সংক্ষেপিত, ১ম খন্ড, ১৯১ পৃষ্ঠা)
(২) যার নিকট সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ ভরি রূপা কিংবা সাড়ে ৫২ ভরি রূপার সমমূল্য টাকা বা এতো টাকা মূল্যের ব্যবসায়ীক পণ্য থাকে (আর এ সবই জীবনের মৌলিক চাহিদার অতিরিক্ত হয়) অথবা এতো টাকা মূল্যের জীবনের মৌলিক চাহিদার অতিরিক্ত মালপত্র থাকে, তাকে "নিসাবের অধিকারী" বলা হয়।” ( নিসাবের অধিকারী, ধনী, ফক্বির ও হাজতে আসলিয়্যাহ ইত্যাদি পরিভাষার বিস্তারিত বিবরণ হানাফী ফিক্বাহ শাস্ত্রের প্রসিদ্ধ কিতাব 'বাহারে শরীয়ত' ৫ম অধ্যায়ে দেখুন।)
(৩) সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার জন্য "বুদ্ধিমান ও প্রাপ্ত বয়স্ক” হওয়া শর্ত নয়। বরং শিশু কিংবা পাগলও যদি নিসাবের মালিক হয়, তবে তাদের সম্পদ থেকে তাদের অভিভাবক পরিশোধ করবে। (রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ৩৬৫ পৃষ্ঠা) সদকায়ে ফিতরের জন্য নিসাবের পরিমাণ তো হচ্ছে যাকাতের নিসাবের সমপরিমাণ যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে যে, সদকায়ে ফিতরের জন্য সম্পদ বর্ধনশীল হওয়া ও বছর পূর্ণ হওয়া শর্ত নয়। অনুরূপভাবে যে সমস্ত বস্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত (যেমন; প্রয়োজনের অতিরিক্ত পোষাক, না সিলানো কাপড়, ঘরের আসবাবপত্র ইত্যাদি) এবং এর মূল্য নিসাব পরিমাণ পৌঁছয়, তবে সে সমস্ত বস্তুর কারণে সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে।
(ওয়াকারুল ফাতাওয়া, ২য় খন্ড, ৩৮৫ পৃষ্ঠা)
(৪) নিসাবের অধিকারী পুরুষের উপর নিজের পক্ষ থেকে, নিজের ছোট শিশুদের পক্ষ থেকে আর যদি কোন উন্মাদ (পাগল) সন্তান থাকে (ঐ পাগল সন্তানটি প্রাপ্ত বয়স্কই হোক না কেন) তার পক্ষ থেকেও সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব, অবশ্য ঐ শিশু বা পাগল যদি নিজেই নিসাবের অধিকারী হয়, তবে তার সম্পদ থেকে ফিতরা পরিশোধ করবে। (আলমগীরী, ১ম খন্ড, ১৯২ পৃষ্ঠা)
(৫) পুরুষ নিসাবের অধিকারীর উপর তার স্ত্রী কিংবা মাতাপিতা অথবা ছোট ভাইবোন ও অন্যান্য নিকটাত্মীয়দের ফিতরা ওয়াজিব নয়। (প্রাগুক্ত, ১৯৩ পৃষ্ঠা)
(৬) পিতা না থাকলে দাদা পিতার স্থলাভিষিক্ত। অর্থাৎ আপন গরীব ও এতিম নাতি-নাতনির পক্ষ থেকে তার উপর সদকায়ে ফিতর দেয়া ওয়াজিব। (দুররে মুখতার, ৩য় খন্ড, ৩৬৭ পৃষ্ঠা)
(৭) মায়ের উপর তার ছোট শিশুর পক্ষ থেকে সদকায়ে ফিতর দেয়া ওয়াজিব নয়। (রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ৩৬৭ পৃষ্ঠা)
(৮) পিতার উপর তার সজ্ঞান ও প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের সদকায়ে ফিতর দেয়া ওয়াজিব নয়। (রদ্দুল মুহতার সম্বলিত দুররে মুখতার, ৩য় খন্ড, ৩৭০ পৃষ্ঠা)
(৯) কোন শরয়ী অপারগতার কারণে রোযা রাখতে পারলোনা অথবা আল্লাহর পানাহ! কোন অপারগতা ছাড়াই রমযানের রোযা রাখলো না, তার উপরও নিসাবের অধিকারী হওয়ার অবস্থায় সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব। (রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ৩৬৭ পৃষ্ঠা)
(১০) স্ত্রী বা প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান, যাদের ভারণপোষণ ইত্যাদি যে ব্যক্তির দায়িত্বে রয়েছে, সে যদি তাদের অনুমতি ব্যতিত তাদের ফিতরা পরিশোধ করে দেয়, তবে আদায় হয়ে যাবে। হ্যাঁ যদি ভরণপোষণ তার দায়িত্বে না থাকে, যেমন; প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান বিয়ে করে আলাদা ঘরে বসবাস করে এবং নিজের ব্যয় নিজেই বহন করে, তবে তার ভরণপোষণের দায়িত্ব তার নিজের দায়িত্বেই হয়ে গেলো। সুতরাং এমন সন্তানের পক্ষ থেকে তার অনুমতি ছাড়া ফিতরা দিলে তা আদায় হবে না।
(১১) স্ত্রী তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া যদি ফিতরা পরিশোধ করে দেয়, তবে আদায় হবে না। (বাহারে শরীয়ত, ১ম খন্ড, ৩৯৮ পৃষ্ঠা)
(১২) ঈদুল ফিতরের সুবহে সাদিকের সময় যে নিসাবের অধিকারী ছিলো, তার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব, যদি সুবহে সাদিকের পর নিসাবের অধিকারী হয়, তবে ওয়াজিব নয়।
(আলমগীরী থেকে সংক্ষেপিত, ১ম খন্ড, ১৯২ পৃষ্ঠা)
(১৩) সদকায়ে ফিতর আদায় করার উত্তম সময় হচ্ছে, ঈদের দিন সুবহে সাদিকের পর থেকে ঈদের নামায আদায় করার পূর্বে আদায় করা, যদি চাঁদ রাত কিংবা রমযানুল মুবারকের যেকোন দিন বরং রমযান শরীফের পূর্বেও যদি কেউ আদায় করে দেয়, তবুও ফিতরা আদায় হয়ে যাবে এবং এরূপ করা একেবারে জায়িয। (আলমগীরী থেকে সংক্ষেপিত, ১ম খন্ড, ১৯২ পৃষ্ঠা)
(১৪) যদি ঈদের দিন অতিবাহিত হয়ে যায় এবং ফিতরা আদায় করেনি, তবুও ফিতরা রহিত হয়ে যাবে না; বরং সারা জীবনে যখনই পরিশোধ করবে, তা আদায় হবে। (আলমগীরী থেকে সংক্ষেপিত, ১ম খন্ড, ১৯২ পৃষ্ঠা)
(১৫) সদকায়ে ফিতর নেয়ার উপযুক্ত সেই, যে যাকাত নেয়ার উপযুক্ত। অর্থাৎ যাকে যাকাত দেয়া যাবে, তাকে ফিতরাও দেয়া যাবে এবং যাকে যাকাত দেয়া যাবে না তাকে ফিতরাও দেয়া যাবে না। (আলমগীরী থেকে সংক্ষেপিত, ১ম খন্ড, ১৯৪ পৃষ্ঠা)
(১৬) সৈয়দ বংশীয়দেরকে সদকায়ে ফিতর দেয়া যাবে না। কেননা তারা হচ্ছে বণী হাশিম গোত্রের। বাহারে শরীয়ত ১ম খন্ডের ৯৩১ পৃষ্ঠায় রয়েছে: বনী হাশিমদেরকে যাকাত (ফিতরা) দেয়া যাবে না। অন্য কেউও তাদের দিতে পারবে না, এক হাশেমী অপর হাশেমীকেও দিতে পারবে না।
বনী হাশিম দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে: হযরত আলী, জাফর, আকিল এবং হযরত আব্বাস ও হারিস বিন আব্দুল মুত্তালিবের সন্তানেরা।
শেয়ার করে অপরকে জানাতে সহযোগিতা করুন।
আরো পড়ুনঃ
সকল জেলার মাগরিবের নামাযের শেষ সময় জানুন
আপনার জেলার ফজরের নামাযের শেষ সময় জেনে নিন।
আজকের ইফতারের সঠিক সময় ও সেহরির শেষ সময় জেনে নিন।
আজকের আসরের নামাযের ওয়াক্ত শুরু ও শেষ সময় জেনে নিন।
0 মন্তব্যসমূহ