খতমে খাজেগান হলো বিশেষ বা কঠিন উদ্দেশ্য পূর্ণ করার জন্য দোয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহর জিকির করা।এটি ওলামায়ে দ্বীন ও আউলিয়ায়ে কেরামের একটি উত্তম আমল। তাই এর নামকরণ হয় খতমে খাজেগান। এই খতম মূলত কঠিন রোগব্যাধি বা ভয়ংকর বালা মুছিবত, জেল জরিমানা, মামলা মুকাদ্দমা,মুমূর্ষু ব্যক্তির মৃত্যু সজ্জায় রুহ না গেলে এবং কষ্ট পেলে, সকল রকম মনের আশা পুরণ হবার জন্য, জাল মাল নিরাপদ, চাকরী মঞ্জুর হওয়ার জন্য সহ আরো অনেক কঠিন হাজত উদ্যেশ্যে পূরণ এবং বিপদে পতিত হলে খতমে খাজেগান পাঠ করলে মহান আল্লাহ পাকের রহমতে উদ্ধার হওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ দরূদে শিফা সর্বরোগ মুক্তির দরূদ।
খতমে খাজেগানের ফযিলতঃ
(১) কঠিন রোগব্যাধি বা ভয়ংকর বালা মুছিবত থেকে বাঁচা যায়।
(২) জেল জরিমানা, মামলা মুকাদ্দমা থেকে রেহাই পাবার জন্য পড়লে উপকার হয়।
(৩) মুমূর্ষু ব্যক্তির মৃত্যু সজ্জায় রুহ না গেলে এবং কষ্ট পেলে এই খতম পড়লে হায়াত থাকলে সুস্থ হয়ে যাবে আর হায়াত না থাকলে ইমানের সাথে মৃত্যু হবে।
(৪) সকল রকম মনের আশা পুরণ হবার জন্য এই খতম পড়া যায়।
(৫)বিপদে পড়লে জান- মাল নিরাপদ এর জন্য পড়া যায়।
(৬) অনেক কঠিন হাজত পূরন, দেশ-বিদেশে আত্মীয়দের বিপদ থেকে উদ্ধার অথবা রোগীর রোগ আরগ্যের জন্য পড়লে উপকার হয়।
(৭) চাকরির আবেদন মঞ্জুর পদোন্নতি মঞ্জুরের জন্য এই খতম পড়া হয়েথাকে।
আরো পড়ুনঃ •সবচেয়ে ছোট দরূদ শরিফ - ফযিলত অনেক বেশি।
খতমে খাজেগান পড়ার আদব ও নিয়মঃ
•এক বৈঠকে কয়েকজন নেক ব্যক্তি অথবা আলিম বা ইমাম সাহেব বা মাদ্রাসার ছাত্র মিলে এই খতম পড়তে হয়।
•কয়েক জন মিলে খতমে খাজেগান পটলে, যেই অযিফা যতবার পড়তে হয় তা সবাই ভাগ করে পড়বে।
যেমন: কোনো অযিফা ১০০বার হলে আর লোক ১০জন হলে প্রতি জনে ১০বার পড়বে এইভাবে সকল অযিফা ভাগ করে পড়ে অল্প সময়ে এই খতম সমাপ্ত হবে।
•সবার অবশ্যই অজু থাকতে হবে।
•পাহেশা এবং অপ্রয়োজনীয় কথা থেকে বাঁচতে হবে।
•ঘরে পড়লে পর্দার খেয়াল করবে।
মোটকথা খতমের পূর্ন আদবের খেয়াল রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ •স্মরণ শক্তি বা স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর দোয়া ও আমল।
খতমে খাজেগান পড়ার সম্পূর্ণ দোয়া ও নিয়ম বাংলাঃ
• আসতাগফিরুল্লা হাল্লাজি- লা-ইলাহা-ইল্লাহুয়াল হায়্যুল কাইউমু ওয়া আতুবু ইলাইহি- ১১বার
১) সূরা ফাতিহা ৭বার।
২)যেকোনো দরূদ শরিফ-১০০বার।
৩) সূরা ইনশিরাহ (আলাম নাশরাহ) ৭৯বার।
৪)সূরা ইখলাস -১০০বার।
৫)সূরা ফাতিহা- ৭বার।
৬) দরূদে খিযরী -১০০বার।
এটি দরূদে খিযরীঃ-
صَلّٰى اللّٰهُ عَلٰى حَبِـيْبِهٖ مُحَمَّدْ وَ اَلِهٖ وَ بَارَكْ وَ سَلَّمْ
উচ্চারণঃ সল্লাল্লাহু আলা হাবিবিহী মুহাম্মদ ওয়া আলিহী ওয়া বারার ওয়া সাল্লাম।
৭) فَسَهِّلْ يَا اِلٰهِىْ كُلَّ صَعْبٍ بِحُرْ مَتِ سَيِّدِ الْاَ بْرَارِ سَهِّلْ سَهِّلْ بِفَضْلِكَ يَاعَزِيْزُ
উচ্চারণ: ফাসাহ্হিল ইয়া ইলাহি কুল্লা ছা’বিন বিহুরমাতি সায়্যেদিল আবররি সাহ্হিল- সাহ্হিল বিফাদ্বলিকা ইয়া আজীজ।(১০০বার)
নিছের প্রত্যেকটি দোয়া ১০০বার করে পড়তে হবে।
اللَّهُمَّ يَا قَاضِي الْحَاجَاتِ
আল্লাহুম্মা ইয়া কাদ্বিয়াল হাযাত।
اللَّهُمَّ يَا كَافِي الْمُهِمَّاتِ
আল্লাহুম্মা ইয়া কা-ফিয়াল মুহিম্মাত।
اللهُم يَا حَلَّ الْمُشْكِلاتِ
আল্লাহুম্মা ইয়া হাল্লাল মুশকিলাত।
اللَّهُمَّ يَا دَافِعَ الْبَلِيَّاتِ
আল্লাহুমা ইয়া দাফিয়াল বালিয়্যাত।
اللُّهُمْ يَا رَافِعَ الدَّرَجَاتِ
আল্লাহুম্মা ইয়া রফিয়াদ দারাযাত।
اللَّهُمَّ يَا مُنَزِّلَ الْبَرَكَاتِ
আল্লাহুমা ইয়া মুনাযযিলাল বারাকাত।
اللَّهُمَّ يَا شَافِي الْأَمْرَاضِ
আল্লাহুমা ইয়া শাফিয়াল আমরাদ্ব।
اللَّهُمَّ يَا رَازِقَ الْعِبَادِ
আল্লাহুমা ইয়া রজিকাল ইবাদ।
اللَّهُمَّ يَا مُعْطِيَ الْخَيْرَاتِ وَالْحَسَنَاتِ
আল্লাহুমা ইয়া মু'তিয়াল খাইরাত ওয়াল হাসানাত।
اللَّهُم يَا مُجِيْبَ الدَّعْوَاتِ
আল্লাহুমা ইয়া মুযিবাদ দাওয়াত।
اللَّهُمَّ يَا مُسَبِّبَ الْأَسْبَابِ
আল্লাহুম্মা ইয়া মুসাব্বিবাল আসবাব।
اللَّهُمَّ يَا مُفَتِحَ الْأَبْوَابِ
আল্লাহুমা ইয়া মুফাত্তিহাল আবওয়াব।
اللَّهُمَّ يَا خَيْرَ النَّاصِرِينَ
আল্লাহুমা ইয়া খাইরান নাসিরীন।
اللَّهُمْ يَا خَيْرَ الْحَافِظِينَ
আল্লাহুমা ইয়া খাবিরাল হাফিযিন।
اللَّهُمَّ يَا خَيْرَ الرَّازِقِينَ
আল্লাহুমা ইয়া খাইরার রফিঈ-ন।
اللَّهُمَّ يَا غِيَاثَ الْمُسْتَغِيْثِيْنَ
আল্লাহুমা ইয়া গিয়াসাল মুসতাগিসিন।
رَبِّ اِنِّىْ مَغْلُوْبٌ فَانْتَصِرْ
রব্বি ইন্নি মাগ্লুবুন ফানতাছির।
يَا غَوْثُ اَغِثْنِىْ وَاَمْدُدْنِىْ
ইয়া গউছু আগিছ্নী ওয়া আমদুদনী।
اِنَّالِلّٰهِ وَاِنَّااِلَيْهِ رَاجِعُوْنْ
ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন।
لَااِلٰهَ اِلَّاۤ اَنْتَ سُبْحَانَكَ اِنِّىْ كُنْتُ مِنَ الظّٰلِمِيْنْ
লা-ইলাহা ইল্লা আ আংতা সুব্হানাকা ইন্নি কুংতু মিনাজ যলিমীন।
فَاسْتَجَبْنَا لَهٗ وَنَجَّيْنٰهُ مِنَ الْغَمِّ وَكَذٰ لِكَ نُنْجِى الْمُؤْمِنِيْنْ
ফাসতাজাবনা লাহু ওয়ানাজ্জাইনাহু মিনাল গম্মি ওয়া কাজালিকা নুংজিল মু’মিনীন।
اَغِثْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّ اللَّهُ عَلَيْكَ وَسَلَّمْ
আগিসনি ইয়া রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইকা ওয়া সাল্লাম।
اَلْمَدَدْ خَوَاهَمْ زِتواے شَاهِ نَقْشَبَندُ
আল মাদাদ খোয়াহাম যেতুয়ে শাহে নাকশেবান্দ।
اَلْمَدَدْ خَوَاهَمْ زِتواے غرِيْب نَواز
আল মাদাদ খোয়াহাম যেতুয়ে গারীবে নাওয়াজ।
اَلْمَدَدْ خَوَاهُمْ زِتو يَا شَهَابَ الدِّيْنْ سُهْرَوَرْدِیْ
আল মাদাদ খোয়াহাম যেতুয়ে শিহাবুদ্দিন সোহরাওয়ার্দী।
بِرَحْمَتِكَ يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
বিরহমাতিকা ইয়া আর হামার রহিমিন।
•খতম শেষে ১০০বার আবার দরূদ শরিফ পড়ে উদ্দেশ্যের জন্য খাস ভাবে দোয়া করবে।আল্লাহর রহমতে এর ফল অবশ্যই দেখা যাবে।এটি খুবই পরিক্ষিত।খতমে খাজেগান যুগ- যুগ, শত-শত বছর এমনকি হাজারো বছর থেকে পরীক্ষিত হয়ে আসছে।
অনেক কষ্টের পর গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট লিখা হয়।শুধু অনুরোধ একটায় শেয়ার করে সাওয়াব অর্জন করুন।
মানুষ আরো খোঁজে:
খতমে খাজেগান, খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম, খতমে খাজেগান pdf, খতমে খাজেগান এর ফজিলত, খতমে খাজেগান আরবি pdf, খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম ও ফজিলত,খতমে খাজেগান পড়ার দোয়া, খতমে খাজা খান, খতমে খাজান,খতমে খাজেগানের ফজিলত, খতমে খাজেগান কেন পড়া হয়, খতমে খাজেগান পড়া কি জায়েজ,খতমে খাজেগান পড়ার বিধান, খতমে খাজেগান পিক। খতমে খাজেগান ছবি।
আরো পড়ুনঃ
•রিজিক বৃদ্ধির দোয়া ও ধনি হওয়ার খাস আমল।
•বদনজরের থেকে বাঁচার আমল ও দোয়া বাংলায়
•শস কুফল বা বান জাদু টোনার ৬তালা দোয়া ও আমল।
•৩৩ আয়াত কি? ৩৩আয়াতের আমল ও বরকত।বিপদ থেকে বাঁচার দূর্গ।
•আয়াতে কুতুবের ১২ অলৌকিক ফযিলত ও ক্ষমতা।
0 মন্তব্যসমূহ