দুরুদ শরিফ বাংলা। দুরুদ কখন পড়তে হয়।দুরুদ শরিফের ফযিলত ও গুরুত্ব

  


দরূদ শরিফের ফযিলত ও বরকত 

দরূদ শরীফের ফযিলত  বর্ননা করে শে সম্ভব নয়,কেননা আমাদের প্রিয় নবী صلى الله عليه و سلم হলের সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী।যাঁর উপর স্বয়ং আল্লাহ পাক এবং তাঁর সকল ফেরেস্তা দরদ শরীফ পড়েন।

দুরুদ শরিফ কখন পড়তে হয়?

আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজিদে ২২তম পারায় সুরা আহযাবের ৬৫নং আয়াতে দুরুদ শরিফ পাঠ করার আদেশ দিয়েছেন।কিন্তু সময় নির্দিষ্ট করে বলেন নি।আর এটাও ঈঙ্গিত দিয়েছেন,স্বয়ং আল্লাহ পাক এবং তার ফিরিস্তাগন সর্ব্দা নবীয়ে পাকের উপর দুরুদ পড়েন।তাই দুরুদ শরিফ সব সময় পড়স যায়।

দুরুদ শরিফ কখন পড়া যাবেনা?

নাপাকি অবস্থায়,অপবিত্র যায়গায়।শরিরে পোশাক না থাকা অবস্থা সহ ফরজ গোসল অবস্থায় পবিত্র অথবা কুলি করা ব্যতিত দুরুদ শরিফ পড়া আদবের খিলাফ।

দুরুদ শরিফ অর্থ কি?

দুরুদ শরিফ এর অনেক অর্থ রয়েছে।যেমন: দুরুদ অর্থ রহমত, দোয়া, মর্জাদা প্রার্থণা। রহমতের দোয়া করা ইত্যাদি। 

আসুন দরূদ শরিফের কিছু অমূল্য ফযিলত জেনে নিন।

(১) প্রিয়নবী(صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি আমার উপর ১০০বার (একশত বার) দরূদ শরীফ পাঠ করে, আল্লাহ্ তাআলা তার দুই চোখের মাঝখানে লিখে দিবেন, এই ব্যক্তি মুনাফিকী এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত । আর তাকে কিয়ামতের দিন শহীদগণের সাথে রাখবেন।”(মাযমাউয যাওয়ায়িদ, ১০ম খন্ড, ২৫৩ পৃষ্ঠা, হাদীস- ১৭২৫৮)

(২) আমিরুল মু'মিনীন, সায়্যিদুনা ওমর ফারুকে আযম (رضي الله عنه) বলেছেন: “নিশ্চয়ই দোয়া আসমান ও যমিনের মাঝখানে ঝুলে থাকে এবং এর কিছুই উপরের দিকে যায়না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আপন নবী (صلى الله عليه و سلم) এর প্রতি দরূদ শরীফ পাঠ না করো।” (সুনানে তিরমিযী, ২য় খন্ড, ২৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৪৮৬)

 হাকীমুল উম্মত, হযরত মুফতি আহমদ ইয়ার খাঁন নঈমী (رحمة الله عليه) এই হাদীসে পাকের ব্যাখ্যায় বলেন: “এ থেকে বুঝা যায়, দরূদ শরীফ দোয়া কবুল হওয়ার বরং আল্লাহ্ তাআলার দরবারে উপস্থিত হওয়ার মাধ্যম।” (মিরআতুল মানাযিহ, ২য় খন্ড, ১০৮ পৃষ্ঠা)

(৩) হুযুরে পাক(صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি আমার ভালবাসা ও আমার প্রতি ভক্তির কারণে আমার উপর সকাল-সন্ধ্যা  তিন বার করে দরূদ শরীফ পাঠ করে,তাহলে আল্লাহ্ তাআলর উপর (নিজ রহমতের) হক হলো, তিনি ঐ বান্দার সেই দিন ও রাতের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।” (আল মু'জামুল কবীর, ১৮তম খন্ড, ৩৬১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৯২৮)

(৪)হুযুরে পাক(صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদে পাক পাঠ করলো, আল্লাহ্ তাআলা তার উপর ১০টি রহমত নাযিল করবেন।” (সহীহ মুসলিম, ২১৬ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৪০৮)

(৫) সর্বশেষ নবী, রাসুলে আরাবী(صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদে পাক পড়ল, আল্লাহ্ তাআলা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন ও তার ১০টি গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।”(সহীহ ইবনে হাবান, ২য় খন্ড, ১৩০ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৯০১)



(৬) প্রিয় রাসূল,রাসুলে মাকবুল (صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করেছেন: “হে আমার উম্মতেরা! নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিনের ভয়াবহ আযাব ও কিয়ামতের হিসাব-নিকাশ থেকে দ্রুত মুক্তি পাবে সেই ব্যক্তি, যে দুনিয়ায় আমার উপর বেশি পরিমাণে দরূদ শরীফ পাঠ করেছে।”(ফেরদৌসুল আখবার, ২য় খন্ড, ৪৭১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৮২১০)

 (৭) প্রিয় নবী, রাসূলে আরবী (صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করেছেন: “তোমরা আমার উপর বেশি পরিমাণে দরূদ শরীফ পাঠ করো, নিঃসন্দেহে আমার উপর তোমাদের দরূদ শরিফ পাঠ করা, তোমাদের গুনাহের জন্য ক্ষমা লাভের মাধ্যম স্বরূপ। (জামেউস্ সগীর, ৮৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৪০৬ )

(৮) নবীয়ে রহমত, শফিয়ে উম্মত,রাসুলে পাক(صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি জুমার দিন আমার উপর একশত বার (১০০বার) দরূদ শরীফ পাঠ করে, সে ব্যক্তি যখন কিয়ামতের দিন আসবে তখন তার সাথে এমন এক নূর থাকবে, ঐ নুর যদি সমস্ত সৃষ্টির মাঝে বন্টন করে দেওয়া হয়, তবে তা সকলের জন্য যথেষ্ট হবে।” (হিলয়াতুল আউলিয়া, ৮ম খন্ড, ৪৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১১৩৪১ )

(৯) হুযুরে পাক(صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করেন: “যখন বৃহস্পতিবার আসে তখন আল্লাহ্ তাআলা ফেরেস্তাদেরকে দুনিয়াতে পাঠান, তাদের কাছে রূপার কাগজ ও স্বর্ণের কলম থাকে। তারা এটা লিখে, কে বৃহস্পতিবার এবং জুমার রাতে (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত) আমার উপর বেশি পরিমাণে দরূদ শরীফ পাঠ করে।” (কানযুল উম্মাল, ১ম খন্ড, ২৫০ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ২১৭৪)

madina sharif pic


(১০)প্রিয়নবী (صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করেছেন: “কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাআলার আরশ ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না। তিন ব্যক্তি আল্লাহ্ তাআলার আরশের ছায়ার নিচে থাকবে।” আরয করা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! তারা কারা? তখন রাসুলে (صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করলেন: “(১) ঐ ব্যক্তি, যে আমার উম্মতের কষ্ট দূর করবে। (২) আমার সুন্নাতকে জীবিতকারী, (৩) আমার উপর বেশি পরিমাণে দরূদ শরীফ পাঠকারী।” (আল্লামা সুয়ুতী লিখিত আল বদরুল মুসাফিরাত ফি উমুরিল আখিরাত, ১৩১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৬৬)

(১১) রাহমাতুল্লীল আ'লামিন, হুযুরে পাক (صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করেছেন: যে ব্যক্তি আমার উপর সকালে দশবার সন্ধ্যায় দশবার দরূদ শরীফ পাঠ করলো, কিয়ামতের দিন সে আমার শাফা'য়াত লাভ করবে।”(মাজমুউয যাওয়ায়িদ, ১০ম খন্ড, ১৬৩ পৃষ্ঠা, হাদীস- ১৭০২২)

(১২) রাসূলে আকরাম (صلى الله عليه و سلم) ইরশাদ করেছেন, যে (ব্যক্তি) আমার উপর একবার দরূদ শরীফ পাঠ করবে, আল্লাহ্ তাআলা তার উপর ১০টি রহমত নাযিল করেন, তার ১০টি গুনাহ ক্ষমা করে দেন এবং তার ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।”(মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খন্ড, ১৮৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৯২২)

দুরুদ শরিফ ও দুরুদে ইব্রাহিম কি একই?

অসংখ্য দুরুদ শরিফ রয়েছে।ওলামায়ে কিরাম বুযুর্গানে দ্বীন অনেক দুরুদ শরিফ লিখেছেন এবং পড়েছেন।আর দুরুদে ইব্রাহিম এটিও আমাদের নবী(صلى الله عليه و سلم)'র দুরুদ।এতে ইব্রাহিম(عليه السلام )এর নাম আছে,তাই একে দুরুদে ইব্রাহিম বলে।

বেশি বেশি দুরুদ পড়লে কি হয়?

অধিক হারে দুরুদ শরিফ পাঠ করলে,আল্লাহ পাকের রহমত নাযিল হয়,আল্লাহর রাসুল(صلى الله عليه و سلم)কিয়ামতের দিন তাকে সুপারিশ করবেন।তার গুনাহ ক্ষমা হবে। দ্বীন দুনিয়ার হাজারো কল্যাণ নসিব হবে।


মানুষ আরো জানতে চায়:

দরুদ শরীফ 

দরূদ শরিফ এর ফজিলত 

দরূদ শরীফের আমল

দরূদ শরীফের বরকত।

দরূদ শরিফ বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ 

দরূদে নারিয়া

দরূদে তাজ

দরূদে তুনাজ্জিনা

দরূদে শিফা 

দরূদে শিফা

দরূদে মাহি

দরূদে মুকাদ্দাস

দরূদে যিয়ারত 

দরুদ শরীফ

দরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ সহ

দরুদ শরীফের ফজিলত

দরুদ অর্থ কি

দরুদ ইব্রাহিম

দরুদ পাঠের ফজিলত

সকল দরুদ শরিফ একসাথে 

দরুদ শরীফের ফজিলত pdf

দরুদ বাংলা উচ্চারণ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ